মাহমুদ বিন মারুফ
প্রকাশ : রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০৩ অপরাহ্ণ
অনলাইন সংস্করণ

মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করলো বিডি ক্লিন

মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করলো বিডি ক্লিন

দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসের অন্যতম মর্মন্তুদ দিন ১৪ ডিসেম্বর—শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বিজয়ের ঊষালগ্নে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হারানোর দুঃসহ বেদনা স্মরণ করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) প্রথম প্রহরে মোহাম্মদপুর রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে সামাজিক সংগঠন বিডি ক্লিন শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এসময় ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলীর পাশাপাশি মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করে তারা।

নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের শেষলগ্নে পুরো দেশের মানুষ যখন চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই এ দেশীয় নরঘাতক রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা মেতে ওঠে বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞে। বিজয়ের চূড়ান্ত মুহূর্তে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার এ নৃশংস নিধনযজ্ঞ সেদিন গোটা জাতিসহ পুরো বিশ্বকেই হতবিহ্বল করে দিয়েছিল।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাত্র দু’দিন আগে, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে ঘাতক চক্র কেবল ঢাকা শহরেই প্রায় দেড়শ’ বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন পেশার কৃতী মানুষকে চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। সান্ধ্য আইনের মধ্যে সেই রাতে তালিকা ধরে ধরে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক, সংস্কৃতিসেবী ও পদস্থ’ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের ঘর থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের হত্যা করে নিস্তব্ধ ভুতুড়ে অন্ধকারে ফেলে রাখা হয়।

পরদিন সকালে ঢাকার মিরপুরের ডোবা-নালা ও রায়েরবাজার ইটখোলাতে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায় অনেক নিথর দেহ। কারও শরীর ছিল বুলেটবিদ্ধ, কারও বা অমানুষিক নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত। অনেককে হাত পেছনে বেঁধে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।

হত্যার আগে যে তাদেরকে নির্যাতন করা হয়েছিল, সে তথ্যও পরবর্তীকালে উঠে আসে। ১৯৭২ সালে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সাময়িকী নিউজ উইকের সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের নিবন্ধ থেকে জানা যায় যে, নিহত শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট এক হাজার ৭০ জন।

বাঙালি জাতির দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রামে এই বুদ্ধিজীবীরা মেধা, মনন ও লেখার মাধ্যমে স্বাধীনতার সংগঠকদের প্রেরণা জুগিয়েছেন এবং মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। গোটা জাতিকে তারা উদ্দীপ্ত করেছেন অধিকার আদায়ের সংগ্রামে। স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম যেন কিছুতেই সহ্য হচ্ছিল না স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের।

যদিও ১৪ ডিসেম্বরকে বুদ্ধিজীবীদের নিধনযজ্ঞের দিন হিসেবে স্মরণ করা হয়, তবে মূলত ১০ ডিসেম্বর ইতিহাসের এ ঘৃণ্যতম অপকর্মের সূচনা হয়। সপ্তাহজুড়ে এদের তালিকায় একে একে উঠে আসে বুদ্ধিদীপ্ত সাহসী মানুষের নাম। মূলত ১০ ডিসেম্বর থেকেই রাতের আঁধারে তালিকাভুক্ত বুদ্ধিজীবীদের বাসা থেকে চোখ বেঁধে রায়েরবাজার ও মিরপুর বধ্যভূমিতে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। 

মারুফ/সকালবেলা

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নদীতে খেলতে গিয়ে পাঁচ শিশু নিখোঁজ, চারজনের লাশ উদ্ধার

1

ভূ-তাত্ত্বিক সতর্কবার্তা: বাংলাদেশের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক ভূমি

2

'জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না': ডা. শফ

3

বদলে গেল ১২টি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনি বিধান

4

ক্ষমতায় গেলে ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ সংবিধানে পুনর্বহা

5

সেন্টমার্টিন উপকূল থেকে ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি

6

রুহুল কবির রিজভীকে পা ছুঁয়ে সালাম: অভিযুক্ত পুলিশ সার্জেন্ট

7

বিদেশ থেকে আনা মোবাইল ফোন নিবন্ধনের উপায় জানাল বিটিআরসি

8

ঢাকা ও আশপাশের জেলার নিরাপত্তায় ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

9

নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ব্যত্যয় ঘটানোর চেষ্টা করলে ছাড় দেওয়া হবে

10

বাংলাদেশ-পাকিস্তানের শিক্ষার্থীদের ভর্তি বন্ধ যুক্তরাজ্যে

11

ঘুমের মধ্যে হঠাৎ 'পড়ে যাওয়ার' অনুভূতি কেন হয়?

12

গত তিন মাসে কোটিপতি বেড়েছে ৭৩৪ জন

13

ঢাকা-১০ আসনের ভোটার হচ্ছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

14

মসজিদে নববীতে নতুন ছাউনি স্থাপন

15

ভোট ও ধর্ম পালনের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনা: মির

16

শিশু সাজিদকে জীবিত উদ্ধার, চলছে চিকিৎসা

17

বারবার ধোকা খেলে দেশ আর সুন্দর হবে না: মুফতি রেজাউল করীম

18

জাতির প্রকৃত শক্তি কেবল তার প্রাকৃতিক সম্পদে নয়: প্রধান উপদে

19

সেনাপ্রধানকে ঘিরে অপপ্রচারে দেশবাসীকে সেনাবাহিনীর সতর্কবার্ত

20
সর্বশেষ সব খবর