পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবি রাষ্ট্রীয় উপহারসংক্রান্ত একটি প্রতারণা মামলায় আরো কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন।
২০২১ সালের এক রাষ্ট্রীয় সফরে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমানের কাছ থেকে বুশরা বিবি একটি বিলাসবহুল গয়নার সেট গ্রহণ করার পর পাকিস্তানের উপহারসংক্রান্ত বিধি ভঙ্গের অভিযোগে তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
ইতোমধ্যেই অন্য মামলায় কারাগারে থাকা এই দম্পতিকে নতুন করে ‘অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ’-এর দায়ে ১০ বছর এবং ‘অপরাধমূলক অসদাচরণ’-এর দায়ে সাত বছরের সাজা ও জরিমানা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সাজাগুলো তাদের আগের সাজাগুলোর সঙ্গে একযোগে কার্যকর হবে।
ইমরান খান অভিযোগগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যা দিয়েছেন। শুনানি শেষে বিবিসিকে তার আইনজীবী সালমান সাফদার জানান, শুক্রবার রাতে আদালতের স্বাভাবিক সময়ের পর দণ্ডের বিষয়ে তাদের জানানো হয় এবং তারা উচ্চ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করবেন।
এ মামলাটি ‘তোশাখানা-২’ নামে পরিচিত। আদালতের নথি অনুযায়ী, ২০২১ সালে সৌদি সফরের সময় বুশরা বিবিকে দেওয়া বুলগারি গয়নার সেট রাষ্ট্রীয় কোষাগার (তোশাখানা) বিধিমালার আওতায় পড়ে।
বিধি অনুযায়ী এসব উপহার তোশাখানায় জমা দেওয়ার কথা থাকলেও রাজনীতিকরা নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় তা কিনে নিতে পারেন। অভিযোগ রয়েছে, ইমরান খান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গয়নার মূল্য কম দেখিয়ে তা উল্লেখযোগ্যভাবে কম দামে কিনে নেন।
কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের ওপর এক কোটি ৬০ লাখ পাকিস্তানি রুপির বেশি জরিমানাও আরোপ করা হয়েছে।
ইমরান খান আগে আরেকটি আলাদা তোশাখানা মামলাতেও দণ্ডিত হয়েছিলেন; তবে তিনি সে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করায় ওই সাজা আপাতত স্থগিত রয়েছে।
তার বিরুদ্ধে আরো একাধিক মামলা বিচারাধীন—এর মধ্যে ২০২৩ সালের ৯ মে সহিংস বিক্ষোভের ঘটনায় সন্ত্রাসবাদসংক্রান্ত অভিযোগও রয়েছে।
২০২২ সালের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে তিনি জনসমক্ষে খুব কমই দেখা দিয়েছেন। তবে তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিতই বার্তা প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে বর্তমান সরকার ও সেনাবাহিনীর প্রভাবশালী প্রধান ফিল্ড মার্শাল অসীম মুনিরের তীব্র সমালোচনা করা হয়। নভেম্বর মাসে প্রায় এক মাস তাকে কোনো সাক্ষাৎ অনুমতি দেওয়া হয়নি; ডিসেম্বরের শুরুতে বোনের সাক্ষাতের পর তার নামে পোস্ট করা এক বার্তায় সেনাপ্রধানকে ‘মানসিকভাবে অস্থিতিশীল’ বলা হয়।
৭৩ বছর বয়সী ইমরান খানকে এরপর থেকে আর কোনো পারিবারিক সাক্ষাৎ অনুমতি দেওয়া হয়নি।
রায়ে বিচারক উল্লেখ করেছেন, তার ‘বৃদ্ধ বয়স’ বিবেচনায় নিয়ে সাজা নির্ধারণে কিছুটা নমনীয়তা দেখানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন