বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ঘোষিত আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ–০১ (কিশোরগঞ্জ–হোসেনপুর) আসনে বিতর্কিত ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ার প্রতিবাদ ও তা বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১টায় কিশোরগঞ্জ শহরের স্টেশন রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ (ভিপি সোহেল) উপস্থিত নেতৃবৃন্দের পরিচয় তুলে ধরেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রবীণ রাজনীতিবিদ মাসুদ হিলালী, সাবেক বিভাগীয় জজ ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি রেজাউল করিম খান চুন্নু এবং জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি রুহুল হোসাইন।
ভূমিকায় ভিপি সোহেল বলেন, টানা ১৪ দিন ধরে চলমান আন্দোলন, অবস্থান কর্মসূচি ও মশাল মিছিল কেবল একটি মনোনয়নের বিরুদ্ধে নয়; এটি কিশোরগঞ্জের ভবিষ্যৎ রক্ষার আন্দোলন। তিনি অভিযোগ করেন, ভৈরবকে জেলা করে কিশোরগঞ্জকে দ্বিখণ্ডিত করার অঙ্গীকারে নির্বাচনে মাঠে নামা শরীফুল আলমের মদদপুষ্ট মাজহারুল ইসলামের মনোনয়নে সাধারণ জনগণ অসন্তুষ্ট। দলের বৃহত্তর স্বার্থেই এই মনোনয়ন বাতিল করে যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানাতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠ করেন রেজাউল করিম খান চুন্নু। লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে শিক্ষিত, ত্যাগী, ফ্যাসিবাদী সরকারের দ্বারা নির্যাতিত ও নিগৃহীত যোগ্য প্রার্থীদের উপেক্ষা করে এমন একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, যিনি এর আগে কিশোরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে দুইবার মনোনীত মেয়র প্রার্থী হয়েও পরাজিত হয়েছেন। এমনকি নিজ কেন্দ্রেও তিনি সাত ভোটে পরাজিত হন বলে দাবি করা হয়। বক্তৃতায় আরও অভিযোগ করা হয়, স্বৈরাচারী সরকারের সঙ্গে আঁতাত থাকায় তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি এবং তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, বিএনপির মূল স্লোগান—‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ’। সে অনুযায়ী দেশের স্বার্থে জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে সক্ষম একজন সৎ, সুশিক্ষিত, জনবান্ধব, জনপ্রিয় ও আদর্শিক প্রার্থী প্রয়োজন। এ জন্য মাজহারুল ইসলামের মনোনয়ন বাতিল করে অন্য কোনো জনসমর্থিত যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়ার জোর দাবি জানানো হয়।
পরে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা। সমাপনী পর্বে মাসুদ হিলালী ও রুহুল হোসাইন সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। শেষে খালেদ সাইফুল্লাহ (ভিপি সোহেল) আগামী ২৩ ডিসেম্বর (সোমবার) পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন এবং সংবাদ সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
মন্তব্য করুন