আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের একটি তিন ধাপের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর স্থায়ী (স্ট্যাটিক) মোতায়েন, মোবাইল টিম ও কেন্দ্রীয় রিজার্ভ—এই তিনটি ধাপে নিরাপত্তা কাঠামো সাজানো হবে।
ইসি সচিব এই তিনটি ধাপের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন:
স্থায়ী (স্ট্যাটিক) মোতায়েন: এর আওতায় কেন্দ্রভিত্তিক কিছু নিরাপত্তাকর্মী থাকবেন। এর সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে স্থায়ী বা অস্থায়ী উভয় ধরনের চেকপোস্ট থাকবে। মোবাইল চেকপোস্ট (এক জায়গায় করার পর দুই কিলোমিটার দূরে গিয়ে আবার করা) এটিও প্রকৃতিতে স্থায়ী ধরনের।
মোবাইল ইউনিট: এই ইউনিটগুলো বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে নজরদারি করবে। তবে একটি মোবাইল ইউনিট কতগুলো কেন্দ্র দেখবে, তা এখনো সংশ্লিষ্ট বাহিনী ঠিক করেনি। ইসি সচিব বলেন, তাদের বিবেচনায় ভৌগোলিক অবস্থান, সড়ক সংযোগ ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে এই সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে।
কেন্দ্রীয় রিজার্ভ: এটি প্রধান রিজার্ভ শক্তি হিসেবে প্রস্তুত থাকবে।
আখতার আহমেদ জানান, মোতায়েন পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনটি অংশ—স্থায়ী, মোবাইল এবং কেন্দ্রীয় রিজার্ভ—আগেই নির্ধারিত থাকবে। এখন পর্যন্ত ইসি থেকে নির্দেশনামালা দিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট বাহিনী তাদের নিজস্ব বিবেচনায় তা সাজাবে। এর সঙ্গে প্রচলিত বিশেষ আঘাতকারী বাহিনীও (স্ট্রাইকিং ফোর্স) থাকবে, যাদের দ্রুত চলাচলের ক্ষমতা ও প্রতিরোধমূলক উপস্থিতি নিশ্চিত করার সক্ষমতা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আইন-শৃঙ্খলা সম্পর্কিত এজেন্সিগুলোর সবার সঙ্গে মিটিংয়ে বসার পর প্রয়োজনে ছোট ছোট আকারে সংশ্লিষ্ট বাহিনীর সঙ্গে বিচ্ছিন্নভাবে বৈঠক করা হবে।
ইসি সচিব বলেন, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা নীতিমালা ও দিকনির্দেশনা দেবেন—কিভাবে কি কাজ করবেন, কি করবেন না—সেগুলো অন্যান্য বারের মতোই প্রদান করবেন। ইসি সচিবালয় সামগ্রিক পর্যবেক্ষণ এবং সমন্বয় করবে, যা নির্বাচন কমিশন থেকেই দেখা হবে।
আখতার আহমেদ জানান, ইসি ভবনে একটি পর্যবেক্ষণ সেল করা হবে। সেই পর্যবেক্ষণ সেলগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলোর একটি সমন্বয় থাকবে। এখন সেলের আকার কত হবে, কতজন প্রতিনিধি থাকবে—এ সম্পর্কে এখনও সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি। প্রতিনিধিরা সংশ্লিষ্ট সংস্থার পক্ষ থেকে যে সংখ্যা দেবেন, সেই অনুযায়ী সমন্বয় করে নেওয়া হবে। ওই বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অন্য চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এতে সকল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মারুফ/সকালবেলা
মন্তব্য করুন