আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বেনিনে একদল বিদ্রোহী সেনা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের দখল নিয়ে প্রেসিডেন্ট প্যাট্রিস তালোনকে উৎখাত করার ঘোষণা দিয়েছে। তবে দেশটির সরকার এই দাবি নাকচ করে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট সম্পূর্ণ নিরাপদ আছেন এবং সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনছে।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) সকালে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে একদল সেনাসদস্য হাজির হয়ে নাটকীয়ভাবে এই ঘোষণা দেন। তারা নিজেদের ‘মিলিটারি কমিটি ফর রিফাউন্ডেশন (সিএমআর)’ হিসেবে পরিচয় দেয়। বিদ্রোহী দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল তিগ্রি পাসকাল। টিভিতে তারা ঘোষণা করেন, ‘‘আমরা একত্রে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্যাট্রিস তালোন আর দেশের প্রেসিডেন্ট থাকছেন না। দেশের সব রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা এখন আমাদের হাতে।’’
সরকারের পাল্টা দাবি: বিদ্রোহীদের এই ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই বেনিনের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় থেকে জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট প্যাট্রিস তালোন নিরাপদে আছেন এবং সেনাবাহিনী পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওলুশেগুন আদজাদি বাকারি রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন যে, একটি অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা চলছে, তবে পরিস্থিতি এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
রাজধানীতে আতঙ্ক ও গোলাগুলি: রোববার সকাল থেকেই রাজধানী কোটোনুতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্টের বাসভবনের কাছে ‘ক্যাম্প গেজো’ এলাকায় ভারী গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। স্থানীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সেখানে ‘লাইভ অ্যামুনিশন’ বা তাজা গুলি ব্যবহার করা হয়েছে। হঠাৎ গোলাগুলির ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং অনেকে প্রাণভয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছুটোছুটি শুরু করেন।
ঘটনার পরপরই প্রেসিডেন্ট ভবনের চারপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং রাজধানীর কেন্দ্রীয় এলাকায় সাধারণের চলাচল সীমিত করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সতর্কতা: এদিকে বেনিনে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিজ দেশের নাগরিকদের ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে ফ্রান্স দূতাবাস। এক বিবৃতিতে দূতাবাস জানিয়েছে, পরিস্থিতি পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে এবং সরকারি নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
এম.এম/সকালবেলা
মন্তব্য করুন