স্বপ্ন কি কখনো এতো নিখুঁতভাবে বাস্তবে ধরা দেয়? নাকি তারও বেশি হয়ে ওঠে? আজ মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে যা ঘটল, সেটি ছিল স্বপ্নেরও অতীত। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলতে নামলেন মুশফিকুর রহিম, দিনটি এমনিতেই ইতিহাসের পাতায় লেখা হয়ে ছিল। কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি কেবল এই অর্জনের মাইলফলকে। নিজের শততম টেস্টকে মুশফিক রাঙিয়ে তুললেন এমন এক পারফরম্যান্সে, যা বহু বছর ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটে আলো ফেলবে।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনেই তিনি দেখালেন তার অভিজ্ঞতা, পরিপক্বতা এবং অদম্য মানসিকতা। সারা দিন জুড়ে ছিলেন মনোযোগী ও ধৈর্যশীল। এবং দিনের শেষ সেশনে এসে, যখন ম্যাচের তাল বদলে দেওয়ার সময়, ঠিক তখনই ফুটে উঠল তার ব্যাটের জাদু। নীরবতা ভেঙে মিরপুরের গ্যালারিতে উঠল একসঙ্গে হাজারো করতালি, মুশফিক কালকের জন্য রোমাঞ্চ রেখে মাঠ ছাড়লেন ৯৯ রানে অপরাজিত থেকে!
এ যেন এক নিখুঁত ক্রিকেটীয় নাটক। শততম টেস্টে পেতে যাচ্ছেন সেঞ্চুরি—দুই সংখ্যাই যেন একে অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছিল মাইলফলক হওয়ার। স্কোরবোর্ডে তিন অঙ্ক ছোঁয়ার মুহূর্ত মুশফিক উপভোগ করবেন হয়তো কাল। ১৩তম টেস্ট সেঞ্চুরির এই মুহূর্তটিই যেন আরও একবার মনে করিয়ে দিল, দুই দশক পেরিয়ে গেলেও তিনি এখনও বাংলাদেশের টেস্ট ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য স্তম্ভ।
৩৮ বছর বয়সেও তার ব্যাটে যে আগের মতোই ধার, শৃঙ্খলা আর দৃঢ়তা আছে—আজকের ইনিংস তারই প্রমাণ। শুধু রেকর্ড নয়, মুশফিক আজ দেখালেন যে বড় মঞ্চ, বড় উপলক্ষ, এগুলোই তাকে সবসময় আরও উঁচুতে তোলার প্রেরণা দেয়।
শততম টেস্ট। ১৩তম সেঞ্চুরি সামনে। আর সবকিছুর ওপরে—নিজ হাতে নিজের দিনের পূর্ণতা লেখা। মুশফিকুর রহিম আজ আবারও প্রমাণ করলেন, ক্রিকেট কেবল তার পেশা নয়; তার ভালোবাসা, তার পরিচয়, তার অনন্ত নিবেদন।
মারুফ/সকালবেলা
মন্তব্য করুন