রাকিব হোসেন: ফেনী সদর উপজেলার ফতেহপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইউসুফ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি, সরকারি সম্পদ অপব্যবহার এবং ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের মাঠে অবৈধভাবে রাস্তা নির্মাণ, ভবন ভাড়া দেওয়া, নিয়োগে ঘুষ গ্রহণ এবং নতুন ভবন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন মাহমুদুর রহমান নামে এক সচেতন নাগরিক।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক একটি বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়ে শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠে পাকা রাস্তা নির্মাণ করেছেন, যা এখন বাজারের রাস্তার মতো ব্যবহৃত হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের খেলার মাঠ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়া, বিদ্যালয়ের একটি ভবন ব্যক্তিগত একটি পরিবারকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে, যা সরকারি সম্পদের অপব্যবহার এবং শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রমকে ব্যাহত করছে।

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগগুলোর মধ্যে একটি হলো, কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে নিয়োগের সময় এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ। এর মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ও গেট নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। তবে সবচেয়ে উদ্বেগজনক অভিযোগটি হলো, বিদ্যালয়ের নতুন চারতলা ভবন নির্মাণে ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশ করে নিম্নমানের কাঁচামাল ব্যবহার করা। এতে ভবনটির স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং সেখানে ক্লাস করা শত শত শিক্ষার্থীর জীবন মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন।
অভিযোগকারী মাহমুদুর রহমান জানান, "একজন নাগরিক হিসেবে শিশুদের নিরাপত্তা ও সরকারি সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা আমার দায়িত্ব। আমি আশা করি, দুদক দ্রুত এই অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।"
একাধিক অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দা এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ চাই। প্রধান শিক্ষকের এ ধরনের কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।" তারা এই দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন।
জানা গেছে, দুদক অভিযোগটি আমলে নিয়ে প্রাথমিকভাবে তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তের অংশ হিসেবে উভয় পক্ষের বক্তব্য গ্রহণ এবং বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট নথি ও আর্থিক লেনদেন খতিয়ে দেখা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
মন্তব্য করুন