২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় দেশের ৩৪৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শতভাগ শিক্ষার্থী পাসের কৃতিত্ব অর্জন করেছে। অর্থাৎ, এসব প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষার্থীও ফেল করেনি। যদিও গত বছর এমন প্রতিষ্ঠান ছিল ১ হাজার ৩৮৮টি, সেই তুলনায় এ বছর শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমেছে ১ হাজার ৪৩টি। ফলে এ ফলাফল শিক্ষার মান ও প্রস্তুতি নিয়ে নতুন করে ভাবনার জন্ম দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় সারাদেশে একযোগে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। ঢাকার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবির এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন এবং ছাত্রী ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ জন। গড় পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ, যা গত বছরের ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশের তুলনায় প্রায় ১৯ শতাংশ কম। তবে কিছু প্রতিষ্ঠান অসাধারণ প্রস্তুতি ও নিয়মিত পাঠদানের মাধ্যমে শতভাগ পাসের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে।’
শিক্ষাবিদেরা মনে করছেন, এমন পরিস্থিতিতে শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রশংসার দাবিদার। কারণ এবারের পরীক্ষায় পাঁচ বছর পর পূর্ণমান, পূর্ণ সিলেবাস ও পূর্ণ সময়ের প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। করোনাকালের ব্যতিক্রমী নিয়মে শিক্ষার্থীরা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে অভ্যস্ত থাকলেও এবার তাদের সামনে ছিল পূর্ণ প্রস্তুতির চ্যালেঞ্জ। তবুও যেসব প্রতিষ্ঠান শতভাগ পাস অর্জন করেছে, তারা নিয়মিত ক্লাস, শিক্ষার্থীদের মানসিক প্রস্তুতি ও অভিভাবক অংশগ্রহণের মাধ্যমে সফলতা পেয়েছে।
ফলাফলে দেখা গেছে : এবারের পরীক্ষায় ২০২টি প্রতিষ্ঠান শতভাগ ফেল করেছে, যা গত বছরের তুলনায় তিনগুণের বেশি। ফলে শিক্ষাব্যবস্থায় বৈষম্য আরও প্রকট হয়ে উঠেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের তদারকি, শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত নির্দেশনা ও নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষার পরিবেশ তাদের সাফল্যের মূল কারণ।
তারা মনে করেন, যদি এই সফলতা অন্য প্রতিষ্ঠানেও ছড়িয়ে দেওয়া যায়, তবে সামগ্রিকভাবে দেশের শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভব হবে। শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ঢাকার সরকারি কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ, নটর ডেম কলেজ, রাজশাহী কলেজ, এবং সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়গুলোর ফলাফল সবচেয়ে ভালো।
সকালবেলা/এমএইচ
মন্তব্য করুন