মাজহারুল করিম অভি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়া ট্রাফিক বিভাগের নানা অনিয়ম ও হয়রানির অভিযোগ তুলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকাল থেকে জেলা শহরের কাউতলী এলাকায় অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেন তারা। সড়ক পরিবহন মালিক–শ্রমিক ঐক্য পরিষদ-এর ব্যানারে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়, যা কিছু সময়ের জন্য যান চলাচলে সাময়িক জটিলতা সৃষ্টি করে।
শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, যানবাহনের নিয়মিত কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা নানা অজুহাতে যানবাহন থামিয়ে অতিরিক্ত জরিমানা আদায় করছেন। তাদের অভিযোগ, মোটরসাইকেল, সিএনজি, পিকআপ ও বাস—সব ধরনের যানবাহনেই 'চেকিংয়ের নামে' অযথা হয়রানি করা হচ্ছে।
তাদের অভিযোগের মূল কেন্দ্রে ছিলেন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মীর আনোয়ার। বক্তারা তার অপসারণ দাবি করেন এবং বলেন, একজন কর্মকর্তার খামখেয়ালিপনায় পুরো পরিবহন খাতকে জিম্মি করে রাখা হবে না। তাদের মতে, মীর আনোয়ারের নেতৃত্বে ট্রাফিক বিভাগের অনিয়ম, অযাচিত জরিমানা, রিকুইজিশনের নামে হয়রানি এবং ব্যক্তিগত স্বার্থে চালকদের উপর বাড়তি চাপ পরিবহন খাতে চরম অস্থিরতা তৈরি করেছে।
মানববন্ধনে বিপুল সংখ্যক পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের অংশগ্রহণে এলাকা স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে। তারা অভিযোগ করেন, সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা থাকা উচিত। কিন্তু কাগজপত্র ঠিক থাকলেও তাদের বিভিন্ন অনৈতিক দাবির কারণে চালকদের নিয়মিত দুর্ভোগ পোহাতে হয়, যার ফলে পরিবহন মালিক-চালক উভয়েই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভকারীরা অনিয়ম বন্ধ, স্বচ্ছতা নিশ্চিতে কার্যকর মনিটরিং এবং হয়রানি বন্ধে নির্দেশনা জারির দাবি জানিয়েছেন। পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতারা সাত দফা দাবির একটি স্মারকলিপি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দেন।
তাদের দাবিসমূহ:
ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মীর আনোয়ারকে অপসারণ ও ট্রাফিক বিভাগের দুর্নীতি বন্ধ করা।
আটক গাড়ি মালিকদের জিম্মায় দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়া।
পরিবহন নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করা।
শহরে মালবাহী যানবাহনের সময়সূচি পুনঃনির্ধারণ এবং বাঁশবাজার এলাকায় ট্রাক লোড–আনলোডের স্থায়ী ব্যবস্থা করা।
মহাসড়কে অযান্ত্রিক যান চলাচল বন্ধ করা।
সহজ শর্তে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান।
রিকুইজিশনের নামে হয়রানি বন্ধ করে রিকুইজিশনকৃত গাড়ির মালিক–চালকদের সরকারি ভাতা নিশ্চিত করা।
মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ নিয়ামত খান, সদস্য সচিব মো. মেরাজ ইসলাম, জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ মিয়া, সহ-সভাপতি ছোট্টু মিয়া সহ অন্যান্য শ্রমিক নেতা।
এম.এম/সকালবেলা
মন্তব্য করুন