দুই কিংবদন্তি লিওনেল মেসি ও সাচিন টেন্ডুলকারের দেখা হয়ে গেল একই মঞ্চে। দুজনই একে অন্যকে দিলেন উপহার।
ভারত সফরের প্রথম দিন কলকাতার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে চরম বিশৃঙ্খলার পর, হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে গোছানো আয়োজনে দর্শক মাতান মেসি। ইন্টার মায়ামির দুই সতীর্থ লুইস সুয়ারেস ও রদ্রিগো দে পলকে নিয়ে রোববার মুম্বাইয়ে পৌঁছান আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকর। আইকনিক ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ জয়ী মহাতারকাকে দেখতে হাজির হয় হাজার হাজার দর্শক।
এখানেও ছিল নানা আয়োজন। হায়দরাবাদের মতোই কিক মেরে গ্যালারিতে বল পাঠান মেসি-সুয়রেসরা। অল-স্টারস প্রীতি ম্যাচে খেলা ভারতীয় তারকা সুনিল ছেত্রিসহ অন্য খেলোয়াড়দের সঙ্গে করমর্দন করেন তারা।
পরে সুনিলকে জাতীয় দলের নিজের ১০ নম্বর জার্সি উপহার দেন মেসি। বলিউড অভিনেতা টাইগার শ্রফ, অজয় দেবগন মঞ্চে এসে হাত মেলান মেসিদের সঙ্গে।
আয়োজনের শেষ দিকে মঞ্চে ডাকা হয় টেন্ডুলকারকে। মেসির সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলতে দেখা যায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের রেকর্ড রান সংগ্রহকারীকে। মেসিকে ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ী নিজের ১০ নম্বর জার্সি উপহার দেন তিনি। টেন্ডুলকারকে আগামী বিশ্বকাপের একটি বল উপহার দেন মেসি। ৫২ বছর বয়সী টেন্ডুলকার কৃতজ্ঞতা জানান সবার প্রতি, প্রশংসায় ভাসান মেসিকে।
“এখানে (ওয়াংখেড়েতে) অসাধারণ কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছি আমি। আমরা মুম্বাইকে বলি স্বপ্নের শহর, এই ভেন্যুতেই অনেক স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। আপনাদের সমর্থন ছাড়া ২০১১ সালে এই মাঠে আমরা সেই সোনালী মুহূর্তগুলো (বিশ্বকাপ জয়) কখনোই পেতাম না। আজ এখানে তাদের তিন জনকে পাওয়া মুম্বাই, মুম্বাইয়ের মানুষ ও ভারতের জন্য একটি সোনালী মুহূর্ত। যেভাবে তিন জনকে স্বাগত জানানো হয়েছে, তা অসাধারণ।”
“যদি তার (মেসির) খেলার কথা বলতে হয়, এর জন্য সঠিক প্ল্যাটফর্ম এটা নয়। তার সম্পর্কে আর কী বলা যায়, তিনি সবকিছুই অর্জন করেছেন। আমরা তার নিবেদন, দৃঢ়তা, প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করি এবং সর্বোপরি তার নম্রতা ও ব্যক্তিত্বের জন্য তাকে সবাই এত ভালোবাসে। সকল মুম্বাইকারের পক্ষ থেকে তার ও তার পরিবারের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। এখানে আসায় ও আমাদের তরুণদের অনুপ্রাণিত করার জন্য আবারও আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ। আশা করি, ফুটবলও আমাদের সকলের আকাঙ্ক্ষার উচ্চতায় পৌঁছাবে।”
‘গোট ইন্ডিয়া ট্যুর’-এ শুক্রবার রাতে কলকাতায় পৌঁছানো মেসি শনিবার সকালে যান সল্ট লেকে। প্রিয় তারকাকে কাছ থেকে এক নজর দেখতে মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করে স্টেডিয়ামে আসেন হাজার হাজার দর্শক। কিন্তু বিভিন্ন ব্যক্তিরা মেসিকে ঘিরে থাকায় তাকে ঠিকমতো দেখতে না পারাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় স্টেডিয়াম।
অল্প কিছু সময় থেকে মেসি চলে যাওয়ার পরপরই শুরু হয় তাণ্ডব। অনেকে সিট উপড়ে ফেলে মাঠের দিকে ছুড়ে মারেন, বোতল ছুড়ে মারেন, অনেকে আবার মাঠে ঢুকে পড়েন এবং মঞ্চ ভেঙে ফেলেন। এমন ঘটনায় বিব্রত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুঃখ প্রকাশ করে তদন্তের ঘোষণা দেন। ঘটনার কিছুক্ষণ পর মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্তকে বিমানবন্দর থেকে আটক করে পুলিশ।
সোমবার দিল্লি সফর দিয়ে শেষ হবে মেসির ভারত সফর।
আযহার/সকালবেলা
মন্তব্য করুন