ইসমাঈল আযহার
প্রকাশ : বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:২৬ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন সংস্করণ

ধ্বংসস্তূপের ভেতর নতুন জীবনের স্বপ্ন, গাজায় ৫৪ দম্পতির গণবিয়ে

ধ্বংসস্তূপের ভেতর নতুন জীবনের স্বপ্ন, গাজায় ৫৪ দম্পতির গণবিয়ে

দীর্ঘ দুই বছরের টানা সংঘাত, মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেও আশার আলো দেখিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) একসঙ্গে ৫৪ দম্পতির গণবিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

দক্ষিণ গাজার ধ্বংসস্তূপের পাশ দিয়ে ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি পোশাকে নববধূ ইমান হাসান লাওয়া এবং স্যুট পরা হিকমাত লাওয়া আরও কয়েকজন নবদম্পতির সঙ্গে এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ২৭ বছর বয়সি হিকমাত লাওয়া বলেন, ‘সবকিছু সত্ত্বেও আমরা নতুন জীবন শুরু করছি। আল্লাহ চাইলে এ যুদ্ধের এখানেই ইতি ঘটবে।’ 

ফিলিস্তিনি সংস্কৃতিতে বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ আচার হলেও চলমান যুদ্ধের সময়ে গাজায় বিয়ে আয়োজন প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ইসরাইলের হামলার মধ্যে ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির পর কিছুটা স্বাভাবিক জীবন ফিরতে শুরু করলেও আগের জমকালো আয়োজন এখন আর নেই।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরে যখন মানুষজন ফিলিস্তিনি পতাকা উড়িয়ে নবদম্পতিদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছিলেন, তখনো গাজার চলমান মানবিক সংকটের কারণে উৎসব ম্লান হয়ে যাচ্ছিল। উপত্যকার ২০ লাখ বাসিন্দার বেশিরভাগই ইমান ও হিকমাতের মতো বাস্তুচ্যুত। 

গাজার বেশিরভাগ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং খাদ্য, পানি ও আশ্রয়ের সংকট প্রতিদিনের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে। এই নবদম্পতি যুদ্ধ চলাকালে নিকটবর্তী দেইর আল-বালাহ এলাকায় পালিয়ে গিয়েছিলেন, যেখানে খাবার ও আশ্রয়সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহ করা কঠিন ছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে কীভাবে নতুন জীবন সাজাবেন, তা তারা জানেনও না।

হিকমাত বলেন, ‘আমরা বিশ্বের অন্য সবার মতো সুখী হতে চাই। একসময় স্বপ্ন দেখতাম একটা বাড়ি, একটা চাকরি আর স্বাভাবিক জীবন। এখন আমার স্বপ্ন শুধু একটা বসবাসের জন্য শুধু একটা তাঁবু।’ তিনি আরও বলেন, ‘জীবন ফিরতে শুরু করেছে, কিন্তু আমরা যেমনটি প্রত্যাশা করেছিলাম তেমন কিন্তু হচ্ছে না।’

সাদা, লাল ও সবুজ রঙের ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি পোশাক পরিহিত ইমান বলেন, কয়েক বছর ধরে চলা ভোগান্তির পর এই বিবাহ অনুষ্ঠান কিছুটা স্বস্তির মুহূর্ত এনে দিয়েছে। তবে তিনি জানান, এই যুদ্ধে তিনি ইসরাইলি হামলায় বাবা-মাসহ আরও অনেক কাছের স্বজনকে হারিয়েছেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে ইমান বলেন, ‘এতো শোকের পর আনন্দ অনুভব করা খুব কঠিন। আল্লাহ চাইলে আমরা আবার সবকিছু গড়ে তুলব।’ সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক মানবিক সংস্থা আল ফারেস আল শাহিম গাজায় এই গণবিয়ের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠান আয়োজনের পাশাপাশি নবদম্পতিদের জন্য কিছু অর্থ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়েছে সংস্থাটি। 

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলের গণহত্যায় ৭০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছে আরও ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ। হতাহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।

সূত্র: এপি, ডেইলি সাবাহ

আইএ/সকালবেলা 

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামী মনোরমা বসুর স্মৃতিতে শিক্ষাবৃত্তি পেল

1

ধর্ম অবমাননা, আবুল সরকারের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি আলেম সমাজের

2

টালবাহানা না করে দ্রুত নির্বাচনী শিডিউল ঘোষণা করুন: মির্জা ফ

3

চুপিসারে বিয়ে সারলেন অভিনেত্রী সামান্থা?

4

হাদির উপর হামলাকারীদের পালিয়ে যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত নয় : বিজিব

5

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে রিট

6

রাবির ৩ শিক্ষক বরখাস্ত, দণ্ডিত ৫ শিক্ষার্থী

7

পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত, আরও কমবে তাপমাত্রা

8

দৃষ্টিশক্তি ফেরানোর যুগান্তকারী প্রযুক্তি: অন্ধত্ব নিরাময়ের

9

পহেলা অগ্রহায়ণকে ‘নববর্ষ’ হিসেবে পালনের ঘোষণা ডাকসুর

10

আবারো ডিসি নিয়োগ ঘিরে বিতর্ক, প্রশাসনের ভেতরে ক্ষোভের শঙ্কা

11

ধ্বংসস্তূপের ভেতর নতুন জীবনের স্বপ্ন, গাজায় ৫৪ দম্পতির গণবিয

12

ভারতে অবস্থান সম্পূর্ণভাবে শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত:

13

নিজ শিশু সন্তান কোলে নিয়েই কারাগারে গেলেন কুকুরছানা হত্যার আ

14

ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্য হত্যাকাণ্ডে ৭ মাদক কারবারির বিরুদ্ধে চ

15

ইসলামবাগে প্লাস্টিকের গোডাউনে অগ্নিকাণ্ড

16

খালেদা জিয়ার আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

17

‘নারী নিরাপদ না হলে বাংলাদেশ অদম্য নয়’—জন্মদিনে তারেক রহমানে

18

দেশ ছেড়েছেন হামজা ,সিলেটের পথে সামিত

19

সদ্য পদত্যাগকারী স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার বিরুদ্ধে নির্বাচনি

20
সর্বশেষ সব খবর