নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশ ও জাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে আগামী নির্বাচনে ধানের শীষকে বিজয়ী করার কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ এবং সবার আগে বাংলাদেশ। নো কম্প্রোমাইজ। ধানের শীষকে জিতানোর মাধ্যমেই দেশকে রক্ষা করতে হবে।’’
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনার কর্মসূচি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। যুবদল ও কৃষক দলের নেতাদের নিয়ে এই সভার আয়োজন করা হয়।
যুদ্ধজয়ের ডাক ও একক পরিকল্পনা: নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘‘আপনার দল আপনার সামনে যে স্ট্রেইটকাট প্ল্যান উপস্থাপন করল, দেখান তো আর কোনো রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে আছে কি না যারা এরকম প্ল্যানিং দিয়েছে? একমাত্র বিএনপি এই প্ল্যান দিয়েছে। কাজেই এখন বসে থাকার সময় নেই। আপনাকে যুদ্ধে নেমে পড়তে হবে। এই যুদ্ধ মানুষের পক্ষে, দেশের পক্ষে।’’
তিনি বলেন, ‘‘দেশকে প্রত্যেকবার বিএনপি রক্ষা করেছে। ইতিহাস ঘাটলে দেখবেন, প্রত্যেকবার রক্ষা করেছেন শহীদ জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া। এখন সেই দায়িত্ব আপনাদের কাঁধে। ঘরে ঘরে গিয়ে জনগণকে কনভেন্স করতে হবে। অন্যথায় এই দেশ এবং জাতি ধ্বংস হয়ে যাবে।’’
মেগা প্রজেক্ট নয়, মানবসম্পদ উন্নয়ন: রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে বিএনপির উন্নয়ন দর্শন কী হবে, তা স্পষ্ট করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কোনো মেগা প্রজেক্টে যাব না, এতে দুর্নীতি হয়। আমরা টাকা খরচ করব শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানবসম্পদ উন্নয়নে।’’
এ সময় তিনি ঘোষণা দেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ১০ লাখ স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে, যার মধ্যে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশই হবেন নারী।
ফ্যামিলি কার্ড ও শিক্ষা ব্যবস্থা: নারী সমাজকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে ‘ফ্যামিলি কার্ড’ চালু করার প্রতিশ্রুতি দেন তারেক রহমান। এছাড়া কৃষকদের জন্য ‘ফার্মার্স কার্ড’ ও সবার জন্য ‘হেলথ কার্ড’ চালুর কথা জানান। শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষার্থীরা যেন ইংরেজির পাশাপাশি তৃতীয় একটি ভাষায়ও দক্ষ হতে পারে—এমন শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই।’’
খেলার মাঠ ও নগর পরিকল্পনা: শহুরে জীবনের শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি নিরসনে তারেক রহমান বলেন, ‘‘দম বন্ধ করা শহরে খেলার মাঠ নেই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সারা বছর একসঙ্গে কাজ করবে। প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে বাজার দরে জায়গা কিনে আমরা খেলার মাঠ তৈরি করে দেব।’’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, যুবদল সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী ও কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন প্রমুখ।
এম.এম/সকালবেলা
মন্তব্য করুন