সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: নদী ভাঙ্গন রোধে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ সহ মোট সাত দফা দাবিতে সাতক্ষীরার আশাশুনিতে দুই শতাধিক নারী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। জলবায়ু পরিবর্তন ও স্থানচ্যুত জনগোষ্ঠীর সুরক্ষার অধিকার অন্তর্ভুক্তির আহ্বানে মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা চত্বরে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
কর্মসূচিতে উত্থাপিত দাবিসমূহ:
জলবায়ু-অভিবাসিত পরিবারগুলোর তালিকা প্রণয়ন করে সরকারি সহায়তার আওতায় আনা।
তাদের জন্য নিরাপদ আবাসন, কর্মসংস্থান ও আয় বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান।
সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচী (ভিজিডি, ভিজিএফ, প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যাক্ত ভাতা, বয়স্ক ভাতা ইত্যাদি) প্রদানে অগ্রাধিকার নিশ্চিত করা।
অভ্যন্তরীণ অভিবাসীদের পুনর্বাসনের জন্য টেকসই পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।
নদীভাঙ্গন রোধে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ।
সুপেয় পানি প্রাপ্তি, স্বাস্থ্যসেবা ও পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম বৃদ্ধি।
প্রতাপনগর এলাকার নিলুফা খাতুন, আবু মুসা, রহিমা খাতুন ও ফাতেমা খাতুন গণমাধ্যমকে বলেন, আশাশুনি উপজেলাটি অধিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকা। বিশেষত সুন্দরবনের কাছে অবস্থিত প্রতাপনগর ইউনিয়ন আইলা, সিডর, বুলবুল, আম্ফান, ইয়াস ও সাম্প্রতিক রেমালসহ বিভিন্ন বড় ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলা করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে এই অঞ্চলে লবণাক্ততা বৃদ্ধি, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও নদীভাঙ্গনের কারণে অনেক পরিবার বসতভিটা হারিয়ে শহরের বস্তি ও অভ্যন্তরীণ স্থানে অভিবাসনে বাধ্য হচ্ছে। ফলে এই স্থানান্তরিত জনগোষ্ঠীর জীবিকা, আশ্রয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
ক্ষতিগ্রস্ত মীর আবু বকর বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতাপনগর এলাকার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে শহরে চলে গেলেও ভালো কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না হলে তারা গ্রামে ফিরে আসেন। কিন্তু গ্রামে ফিরে নতুন করে ঘরবাড়ি শুরু করার আগেই আবারও বন্যা-জলোচ্ছ্বাস শুরু হয়। তিনি দ্রুত একটি টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জোর দাবি জানান।
নদী ভাঙ্গন কবলিত প্রতাপনগর ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষের আয়োজনে এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কারিতাস-এর সহযোগিতায় এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসেন-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রতাপনগরের দুর্দশার কথা তুলে ধরে ক্ষতিগ্রস্ত নিলুফা খাতুন, আবু মুসা, রহিমা খাতুন, ফাতেমা খাতুন, সাংবাদিক মীর আবু বকর, অঞ্জলি বিশ্বাস, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কারিতাস বাংলাদেশ খুলনা অঞ্চলের প্রোগ্রাম অফিসার ডা. সুমন কুমার মালাকার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
কর্মসূচি শেষে সাত দফা দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এম.এম/সকালবেলা
মন্তব্য করুন