সিঙ্গাপুর জেনারেল হসপিটালে চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ জুলাইযোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা এখনো অত্যন্ত সংকটজনক এবং অপরিবর্তিত রয়েছে। সর্বশেষ সিটিস্ক্যান রিপোর্টে তার মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহের ঘাটতিজনিত পরিবর্তন (ইসকেমিয়া) কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ার তথ্য জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাদের মতে, আপাতত কোনো ক্লিনিক্যাল উন্নতির লক্ষণ নেই।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে হাদির স্বাস্থ্যের সার্বিক পরিস্থিতি জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জন ডা. আব্দুল আহাদ, যিনি হাদির চিকিৎসার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।
ডা. আব্দুল আহাদ জানান, সিঙ্গাপুরে নেওয়ার পর করা নতুন সিটিস্ক্যান রিপোর্টে দেখা গেছে, হাদির মস্তিষ্কে ইসকেমিয়া আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। একইসঙ্গে ব্রেনের নিউরোলজিক্যাল রিফ্লেক্সগুলোতেও উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নতি দেখা যায়নি। তিনি বলেন, “হাদির শারীরিক অবস্থা বর্তমানে ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড স্ট্যাটিক— অর্থাৎ অবনতি হয়নি, আবার উন্নতিও হয়নি।” (উদ্ধৃতি অপরিবর্তনীয়)
বর্তমানে হাদির হৃদযন্ত্র, ফুসফুস ও কিডনি চিকিৎসা সহায়তার (সাপোর্ট) মাধ্যমে সচল রাখা হয়েছে। মাথার ভেতরে রয়ে যাওয়া গুলির অংশটি অপসারণের বিষয়ে চিকিৎসকরা জানান, গুলির অংশটি মস্তিষ্কের অত্যন্ত গভীরে (ডিপ সিলেট অঞ্চল) অবস্থান করছে। এই মুহূর্তে সেটি অপসারণ করলেও ব্রেন ফাংশনে দৃশ্যমান উন্নতির নিশ্চয়তা নেই; বরং অস্ত্রোপচার বর্তমান অবস্থায় আরও ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়ার আলোচনার বিষয়ে ডা. আহাদ জানান, সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদের মূল্যায়নে এটি এখনো বাস্তবসম্মত নয়। কারণ, দীর্ঘ ভ্রমণের ধকল সহ্য করার মতো শারীরিক সক্ষমতা তার নেই। আপাতত সিঙ্গাপুর জেনারেল হসপিটালেই 'কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টের' মাধ্যমে তার চিকিৎসা ও নিবিড় পর্যবেক্ষণ চলবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাদির শারীরিক অবস্থার উন্নতির বিষয়ে ছড়ানো তথ্যের কোনো ভিত্তি নেই বলে ডা. আহাদ স্পষ্ট করেন। তিনি দেশবাসীকে গুজবে কান না দিয়ে হাদির সুস্থতার জন্য দোয়া করার আহ্বান জানান।
এদিকে, ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হাদির শরীর স্থিতিশীল হওয়ার অপেক্ষা করা হচ্ছে। ব্রেন সক্রিয় করার জন্য অপারেশন প্রয়োজন হতে পারে, তবে তার আগে শরীরকে সম্পূর্ণ স্থিতিশীল করতে হবে। বর্তমানে হাদির ব্রেন ছাড়া শরীরের অন্য সব অঙ্গ সক্রিয় রয়েছে। হাদির পরিবার তার দ্রুত আরোগ্যের জন্য সবার কাছে বিশেষ দোয়া চেয়েছেন।
মারুফ/সকালবেলা
মন্তব্য করুন