২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান কর্মী ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশজুড়ে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। তার হত্যাকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য বড়ো শহরের রাস্তায় নিরাপত্তা বাহিনী নামানো হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচনের আগে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
ভারতবিরোধী বক্তব্যের জন্য পরিচিত হাদি গত বছর শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা সেই গণ-অভ্যুত্থানের একজন শীর্ষ নেতা ছিলেন, যার ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হতে হয়।
ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ
ঢাকা থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক মৌদুদ আহমেদ সুজন জানান, অবসরপ্রাপ্ত এক বাংলাদেশি সেনা কর্মকর্তা প্রকাশ্যে ভারতের কাছ থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের দাবি জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক সহিংসতার জন্য দায়ীদের আশ্রয় দিচ্ছে ভারত।
শাহবাগে এক বিক্ষোভে বক্তব্য দিতে গিয়ে সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমান— যিনি নিজেকে শেখ হাসিনার শাসনামলে গুমের শিকার দাবি করেন— ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে কর্তৃত্ববাদী শাসনকে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, ‘জঙ্গি’ আখ্যা দিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছে।
রহমান আরও দাবি করেন, হাদির হত্যার সঙ্গে জড়িত যারা ভারতে পালিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তাদের সবাইকে দেশে ফিরিয়ে এনে শেখ হাসিনার সঙ্গে একসঙ্গে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
এদিকে, ভারত এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। শুক্রবার ভারত জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের ‘অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি’ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, তবে দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না— এ কথা জানিয়েছে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন।
হাইকমিশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “ভারত ও বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবগত আছেন যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এখনও পরিবর্তনশীল ও সংবেদনশীল, যা নিরপেক্ষ ও গভীর বিশ্লেষণের দাবি রাখে।”
আল জাজিরার আরেক প্রতিবেদক তানভীর চৌধুরী জানান, শাহবাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘বিক্ষোভকারীদের মধ্যে প্রবল ভারতবিরোধী মনোভাব দেখা যাচ্ছে। তারা বলছে, বিশেষ করে নির্বাচনের আগে ভারত সব সময় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত থেকেই উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন।’
আইএ/সকালবেলা
মন্তব্য করুন