শিরজুল ইসলাম রাসেলঃ বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় এক ইউপি সদস্যের ছেলেকে ইট দিয়ে পিটিয়ে ‘মধ্যযুগীয় কায়দায়’ হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী অনিক (৩০) উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য মো. ফখরুল ইসলাম রোকনের ছেলে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত একই ওয়ার্ডের পশ্চিম পাংশা গ্রামের মালেক রাঢ়ীর ছেলে মো. ফজলুর রাঢ়ী (৪৫)। ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে তালুকদার বাড়ির সামনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় দোকানদার মনি বেগম বলেন, "ঘটনাটি আমার দোকানের সামনেই ঘটে। আমি ফজলু ও অনিককে দোকানের সামনে বসে কথা বলতে দেখি। আমি ঘরের কাজে ভেতরে ঢুকতেই হঠাৎ শুনি অনিক বলছে, 'আপনি আমার বড় ভাই, আমাকে মারছেন কেন?' আর ফজলু বলছে 'দৌড় দে'। আমি ঘর থেকে বের হয়ে দেখি অনিক রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার পাশে পড়ে আছে আর ফজলু আমার ঘরের সামনে রাখা ইট দিয়ে অনিকের মাথায় বারবার আঘাত করছে।"
তিনি আরও বলেন, "আমি চিৎকার শুরু করি 'ছেলেটাকে বাঁচাও'। কিছুক্ষণ পর এক বাইক চালক এসে অনিককে উদ্ধার করে। এ সময় ফজলু তড়িঘড়ি করে পালিয়ে যায়।" মনি বেগম জানান, তিনি এক ভ্যান চালকের কাছে শুনেছেন, শাকিব সরদার নামে এক ব্যক্তি অনিককে ওই দোকানে চা-বিস্কুট খেতে রেখে গিয়েছিল।
আহত অনিকের বাবা ইউপি সদস্য ফখরুল ইসলাম রোকন বলেন, "আমার ছেলে সকালে বাইসাইকেল নিয়ে ঘর থেকে বের হয়। কিছুক্ষণ পর একজন আমাকে ফোন করে জানায় অনিক, শাকিবের সাথে আছে। আমি শাকিবকে ফোন দিলে সে জানায় অনিক তার সাথে নাস্তা করছে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই বাসায় পৌঁছে দেবে। এর মাত্র পাঁচ মিনিট পরই আবার ফোন আসে, কারা যেন অনিককে মেরে রাস্তার পাশে ফেলে রেখেছে।"
তিনি জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি শাকিবকে পাননি। অনিককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে রেফার করেন।
এ বিষয়ে শাকিব সরদার জানান, অনিক তার সাথে নাস্তা খাওয়ার পর তিনি অনিককে দোকানের সামনে রেখে নিজের কাজে চলে যান। ফজলু যে সেখানে ছিল, তা তিনি জানতেন না বলে দাবি করেন।
এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল মামুন-উল ইসলাম বলেন, "ইউপি সদস্যের ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে তদন্তকারী অফিসার পাঠানো হয়েছে এবং আসামিকে ধরতে অভিযান চলছে। আমরা খুব শীঘ্রই আসামিকে ধরতে সক্ষম হব।"
এম.এম/সকালবেলা
মন্তব্য করুন