মোঃ ইমরান মাহমুদ, জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুরের মাদারগঞ্জে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজসে ভূমি অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে কড়ইচড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. হানিফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে খারিজ (নামজারি) করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, টাকা ছাড়া যেন ফাইলই নড়ে না। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মো. শাহিন মিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর নিকট লিখিত অভিযোগও করেছেন।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন যে, ভুয়া নামজারি সহজ হওয়ায় একজনের জমি অন্যজন নামজারি করে নিয়ে যাচ্ছে। এতে জমির প্রকৃত মালিকরা চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
ভুক্তভোগীর অভিযোগসূত্রে জানা যায়, মাদারগঞ্জ উপজেলার কড়ইচড়া ইউনিয়নের চরগুজামানিকা মৌজার বাসিন্দা মো. ছামিউল ইসলাম তার পৈত্রিক সম্পত্তির ৯ শতাংশ জমি খারিজ করার জন্য ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে জানতে পারেন, তার জমি ইতিমধ্যেই অন্য নামে খারিজ করা হয়ে গেছে। মৃত আব্দুর রহমান মাস্টারের ছেলে মো. রবিউল ইসলাম, মেয়ে লুৎফুন নেছা ও বিউটি বেগম যৌথভাবে সেই খারিজ করে নিয়েছেন।
ভুয়া নামজারিটি বাতিলের জন্য রেজাউল করিম, রফিকুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, ছামিউল ইসলাম ও ফজলুল হক ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন।
সরেজমিনে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, মহিষবাথান এলাকার মো. সজিব মিয়া নামে এক ছেলে অফিসের কোনো স্টাফ না হলেও কম্পিউটারে বসে কাজ করছেন। অভিযোগ রয়েছে, ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা এই সজিবের মাধ্যমেই দালালদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা লেনদেন করেন। এ যেন ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে ঘুষের রাজত্বে পরিণত করার এক প্রক্রিয়া।
ভুক্তভোগী হাবিবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, "নায়েব সাহেব আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন। আমাদের জমি মমিনুন্নেছা ও রবিউলের নামে খারিজ করে দিছে। তারা বলেছিল খারিজ এটা সংশোধন করবে, কিন্তু সংশোধন করছে না। এখন নায়েব টাকা চায়। টাকা দিলেই কেবল খারিজ ভাঙবে।"
আরেক ভুক্তভোগী শাহিন মিয়া বলেন, "আমরা দীর্ঘদিন যাবত ইউনিয়ন ভূমি অফিসে বিষয়টি নিয়ে ঘুরছি। ভূমি কর্মকর্তা আমার সাথে খারাপ আচরণও করেছে। এসিল্যান্ড অফিসে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিকার পাইনি।"
এসব অভিযোগের বিষয়ে ক্যামেরার সামনে কোনো কথা বলতে রাজি হননি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো. হানিফ উদ্দিন।
মাদারগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাসেল দিও গণমাধ্যমকে বলেন, "অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে তাদেরকে আমার কাছে পাঠিয়ে দেন। আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো।"
এম.এম/সকালবেলা
মন্তব্য করুন