তারেক হায়দার, কক্সবাজার: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় জমির বিরোধ নিয়ে তর্কে জড়িয়ে ভাতিজার লাথিতে আপন চাচা নিহত হয়েছেন। বুধবার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১২টার দিকে উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের সাকের মোহাম্মদ চর স্কুলপাড়া এলাকায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ কালু (৭৫)। তিনি একই এলাকার মরহুম মকবুল আলীর প্রথম পুত্র। অভিযুক্ত ভাতিজা আলী আহাম্মদকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেছে পুলিশ।
চকরিয়া থানার ওসি তৌহিদুল আনোয়ার ঘটনাটি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, "নিহত পরিবারের বরাত দিয়ে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মোহাম্মদ কালু তার ছেলেদের নিয়ে বিরোধীয় জমিতে চাষ করতে যান। ঠিক তখনই ভাতিজা আলী আহমদ ঘটনাস্থলে এসে বৃদ্ধ কালুর বুকে দু’বার লাথি মারেন। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। দ্রুত স্থানীয় ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোহাম্মদ কালুকে মৃত ঘোষণা করেন।"
নিহত মোহাম্মদ কালুর ছেলে সরওয়ার আলম ও মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, তাদের তিন কানি (১২০ শতক) জমি গত ২০ বছর ধরে তাদের জ্যাঠাতো ভাই আলী আহমদ জালিয়াতির মাধ্যমে ভোগ করে আসছিল। সম্প্রতি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এক কানি (৪০ শতক) জমির ডিগ্রি তাদের অনুকূলে আসে। এর পরও আদালতের রায় অনুযায়ী জমি বুঝিয়ে দিতে আলী আহমদ অস্বীকৃতি জানায়।
তারা আরও জানান, বুধবার সকালে তাদের বাবা জমিতে চাষ করতে গেলে আলী আহমদ দৌড়ে এসে বৃদ্ধ কালুর বুকে লাথি মারেন, এতে তিনি মাটিতে পড়ে যান এবং তৎক্ষণাৎ মৃত্যুবরণ করেন।
গণপিটুনির ঘটনা:
কালুর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিৎ দাসসহ বিপুলসংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে যান এবং আলী আহাম্মদকে আটক করেন। তবে পুলিশ ভ্যান শাহ উমরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় পৌঁছানোর আগেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ক্ষুব্ধ স্বজন ও কয়েকশো স্থানীয় মানুষ আলী আহাম্মদকে পুলিশ ভ্যান থেকে টেনে নামিয়ে বেদম মারধর করে। ইটের আঘাতে তার মাথায় গুরুতর জখম হয়। এসময় স্বামীকে বাঁচাতে গেলে তার স্ত্রী পারভীন আক্তার বানুকেও লাঞ্ছিত করা হয় এবং তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন।
ওসি তৌহিদুল আনোয়ার জানান, আটক আলী আহাম্মদকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে থানায় নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
এম.এম/সকালবেলা
মন্তব্য করুন