সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. সারওয়ার আলম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, গুরুত্বপূর্ণ কোনো স্থানে কোনো অবৈধ স্থাপনা থাকবে না। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কঠোর বার্তা দেন।
ডিসি সারওয়ার আলম বলেন, "অনেক জায়গা দখল হয়ে আছে, এটা কারা করেছে, আমাদের আশপাশের লোকজন। দখল যেন একটা ঝোঁকে পরিণত হয়েছে। বিশ্বনাথের বাসিয়া নদী হোক আর সিলেটের যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ স্থান হোক, সব জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।" তিনি আরও যোগ করেন, রাস্তায় যাতে অবৈধভাবে সিএনজি স্ট্যান্ড করে যানজট সৃষ্টি করা না হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে এবং অবৈধ স্ট্যান্ডগুলো দ্রুত সরিয়ে নিতে হবে।
তিনি বলেন, "আমরা সিলেটকে সুন্দর করে তুলতে চাই। ইতোমধ্যে সিলেট শহরকে সুন্দর করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আমরা প্রতিটি উপজেলাকেও সুন্দর করে তুলতে চাই। এই সৌন্দর্য আমরাই উপভোগ করব, তাই আমাদের প্রয়োজনেই সহযোগিতা করতে হবে।"
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে নানা অভিযোগের বিষয়ে ডিসি সারওয়ার বলেন, "উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। এখানে এসে দেখলাম লোকবল একেবারেই কম, মাত্র দুজন চিকিৎসক দিয়ে তারা সেবা দিচ্ছে। এখানে পরিচ্ছন্নতাকর্মীও নেই, আমি আসার খবর শুনে আজ তারা ভাড়াটে লোক দিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেছে।" তিনি আশ্বাস দেন, এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরও অনেক ঘাটতি আছে, সেগুলো পূরণ করার চেষ্টা করা হবে যাতে এলাকার সাধারণ রোগীরা ভালো মানের সেবা পায়।
এর আগে, এদিন দুপুর ১২টায় তিনি বিশ্বনাথ থানা কম্পাউন্ড পরিদর্শন করেন। দুপুর ১টা থেকে ২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও বিভাগ হেঁটে হেঁটে পরিদর্শন করেন এবং রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। বিকেল ৩টায় উপজেলা হলরুমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করেন ও কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এরপর তিনি উপজেলা ভূমি, সমাজসেবা, কৃষি, প্রাণীসম্পদ, শিক্ষা অফিস ও পৌরসভা কার্যালয় পরিদর্শন করেন এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
প্রসঙ্গত, সিলেটের জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদানের পর মো. সারওয়ার আলম মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো বিশ্বনাথ উপজেলায় পরিদর্শনে যান। তার এই সফরকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই পৌরশহরে এক ভিন্ন চিত্র দেখা যায়—নিত্যদিনের যানজটের এই শহরের রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। প্রতিটি মোড়ে মোড়ে আনসার, গ্রামপুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। ডিসি সারওয়ার আলমের সাড়ে চার ঘণ্টার এই সফর উপজেলা প্রশাসনকে জাগিয়ে তোলে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।
মারুফ/সকালবেলা
মন্তব্য করুন