পরিবারের সকল সদস্য আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকলেও, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে যোগ দেন রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ। বিএনপির রাজনীতি বেছে নেওয়ায় পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন তিনি। সেই ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শ্রাবণ এখন আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে লড়বেন 'ধানের শীষ' প্রতীক নিয়ে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭টি আসনে দলের প্রাথমিক প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করেন, যেখানে শ্রাবণের মনোনয়ন নিশ্চিত করা হয়।
প্রায় এক যুগ পর, গত ২০ সেপ্টেম্বর শ্রাবণ তার নিজ নির্বাচনী এলাকা যশোরের কেশবপুরে ফিরে আসেন এবং নেতাকর্মীদের বিপুল ভালোবাসায় সিক্ত হন। সেদিনই তিনি যশোর-৬ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশার ঘোষণা দেন।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শ্রাবণ বলেন, "আমার পরিবার ভিন্ন মতাদর্শের হলেও নির্বাচনে তার কোনো প্রভাব পড়বে না। দলে মনোনয়ন নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকলেও, আমি সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে ধানের শীষকে বিজয়ী করে এই আসনটি তারেক রহমানকে উপহার দিতে চাই।" তিনি নির্বাচিত হলে কেশবপুরের প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানে কাজ করারও অঙ্গীকার করেন।
আওয়ামী লীগ পরিবার থেকে ছাত্রদলের সভাপতি:
শ্রাবণের গ্রামের বাড়ি কেশবপুর উপজেলার চিংড়া গ্রামে। তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা কাজী রফিকুল ইসলাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান। শ্রাবণের বড় ভাই মুস্তাফিজুল ইসলাম সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান (বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত), আরেক ভাই মোজাহিদুল ইসলাম উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক এবং ছোট ভাই আজাহারুল ইসলাম উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ছিলেন।
২০০৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়েই ছাত্রদলের রাজনীতিতে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন শ্রাবণ। ২০২২ সালে তিনি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০২৩ সালের আগস্টে তাকে ‘অসুস্থতার’ কারণ দেখিয়ে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হলেও দুই মাস পরই বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়।
আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান হয়েও বিএনপির রাজনীতিতে দৃঢ়তার কারণে তিনি পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর প্রায় এক যুগ পর নিজ জন্মভূমিতে ফিরে তিনি বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচির লিফলেট বিতরণ করেন, তবে নিজ বাড়িতে যাননি বা পরিবারের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করেননি বলে জানা গেছে।
এম.এম/সকালবেলা
মন্তব্য করুন