বছরজুড়ে প্রস্তুতি নেওয়ার পরও সময়মতো শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই তুলে দেওয়া নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রায় ৩০ কোটি পাঠ্যবই ছাপা হবে, যার মধ্যে মাধ্যমিকের বই ১৮ কোটি। অথচ মাধ্যমিকের বই এখনো ছাপানোই শুরু হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাত্র মিলেছে ক্রয়াদেশ। এখন ছাপাখানার সঙ্গে চুক্তি করা হবে, যাতে সময় লাগবে অন্তত ২৮ দিন। এরপর শুরু হবে ছাপার কাজ। চুক্তি অনুযায়ী—বই ছাপাতেও কমপক্ষে ৭০ দিন সময় পাবেন ছাপাখানা মালিকরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ছাপাখানাগুলোতে বাড়তি চাপ পড়বে। ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে শ্রমিক পাওয়া দুষ্কর হবে। এতে জাতীয় নির্বাচনের আগে পাঠ্যবই ছাপা, বাঁধাই ও বিতরণ সময়মতো সম্ভব হবে না। ফলে কোনোভাবেই ভোটের আগে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই তুলে দেওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে আগামী বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে বলে মনে করেন খোদ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তারা।
তারা বলছেন, পাঠ্যবই ছাপায় এমন বিলম্বে এবার এনসিটিবির কোনো দায় নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয় কোনো কারণ ছাড়াই মাধ্যমিকের ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বইয়ের ক্রয়াদেশে অনুমোদন না দিয়ে প্রথম দফার টেন্ডার বাতিল করেছে। এ কারণেই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যের পাঠ্যবই তুলে দিতে গত এপ্রিল মাসে কাজ শুরু করে এনসিটিবি। জুন-জুলাইয়ে টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। লক্ষ্য ছিল নভেম্বরের মধ্যে ছাপা শেষ করে ডিসেম্বরে সব উপজেলায় পাঠ্যবই পৌঁছে দেওয়া। তবে সেপ্টেম্বরের দিকে সে লক্ষ্যে ছেদ পড়ে।
সরকারের ক্রয়-সংক্রান্ত কমিটি ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের ক্রয়াদেশে অনুমোদন না দেওয়ায় টেন্ডার বাতিল হয়ে যায়। পুনরায় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ক্রয়াদেশ পেতে সময় লেগেছে বাড়তি আড়াই মাস। পাশাপাশি নবম শ্রেণির প্রায় ছয় কোটি বই ছাপার ক্রয়াদেশের অনুমোদন দিতেও দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রাখা হয়। এতে পাঠ্যবই ছাপায় পিছিয়ে পড়ে এনসিটিবি।
মন্তব্য করুন