নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীর রায়পুরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে মামুন মিয়া (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার নিলক্ষা ইউনিয়নের দড়িগাঁও দক্ষিণপাড়া এলাকায় এই সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষ চলাকালে হামলাকারীরা স্থানীয় বিএনপি কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছবি ছিঁড়ে মেঝেতে ফেলে অবমাননা করা হয়।
ঘটনার বিবরণ: নিহত মামুন মিয়া নিলক্ষার দড়িগাঁও এলাকার আব্দুল আউয়াল মিয়ার ছেলে এবং তিনি স্থানীয় নাজিমউদ্দীন গ্রুপের সমর্থক ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নাজিম উদ্দীন মেম্বার ও আলাল মুন্সি গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছে। এরই জেরে সোমবার দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে আব্দুর রশিদের ছেলে বেলাল (৩০) ও মস্তু মিয়ার ছেলে আব্দুল আউয়াল (৫৫)-এর নাম জানা গেছে। বাকি আহতরা জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপ: খবর পেয়ে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রায়পুরা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) প্রবীর কুমার ঘোষ জানান, দীর্ঘদিনের বিরোধকে কেন্দ্র করে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সেনাক্যাম্প স্থাপনের সুপারিশ: এদিকে, রায়পুরায় ক্রমবর্ধমান সহিংসতা রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে চরাঞ্চল থেকে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ও সেনাক্যাম্প স্থাপনের অনুরোধ জানিয়ে ঢাকা সেনানিবাসের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত এক বছরে এই উপজেলায় ১২ জন খুনের শিকার হয়েছেন। ২৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার এই জনপদে প্রায়ই প্রাণঘাতী সংঘর্ষ হচ্ছে। চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা অপরাধ করে চরাঞ্চলে আশ্রয় নেওয়ায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটছে। তাই অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ ও শান্তি বজায় রাখতে সেনাক্যাম্প স্থাপন জরুরি।
এম.এম/সকালবেলা
মন্তব্য করুন