রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সোমবার একটি আইনে স্বাক্ষর করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্লুটোনিয়াম নিষ্পত্তি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করেছেন। পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহারযোগ্য প্লুটোনিয়াম কমানোর লক্ষ্যে এই চুক্তিটি করা হয়েছিল, যা উভয় দেশকে নতুন পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণ থেকে বিরত রাখতে সহায়ক ছিল।
এই পদক্ষেপটি এমন এক সময়ে নেওয়া হলো, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের সম্পর্কে শীতলতা বিরাজ করছে। সম্প্রতি ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্টের অনড় অবস্থানের কারণে ট্রাম্প তার প্রতি হতাশা প্রকাশ করেছেন। গত সপ্তাহে ট্রাম্প পুতিনের সঙ্গে একটি পরিকল্পিত শান্তি শীর্ষ সম্মেলনকে ‘সময়ের অপচয়’ বলে বাতিল করে দেন।
২০০০ সালে স্বাক্ষরিত এবং ২০১০ সালে সংশোধিত ‘প্লুটোনিয়াম ব্যবস্থাপনা ও নিষ্পত্তি চুক্তি’ অনুযায়ী, মস্কো ও ওয়াশিংটন উভয়ই তাদের স্নায়ুযুদ্ধকালীন বিশাল মজুত থেকে ৩৪ মেট্রিক টন করে প্লুটোনিয়াম কমাতে এবং তা পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করতে সম্মত হয়েছিল। মার্কিন কর্মকর্তাদের ধারণা অনুযায়ী, এই পরিমাণ প্লুটোনিয়াম দিয়ে প্রায় ১৭ হাজার পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা সম্ভব ছিল।
মূলত, ২০১৬ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে সম্পর্ক অবনতির সময় পুতিন এই চুক্তিতে রাশিয়ার অংশগ্রহণ স্থগিত করেছিলেন। সোমবারের স্বাক্ষরিত আইনটির মাধ্যমে সেই স্থগিতাদেশকে চূড়ান্তভাবে বাতিল করা হলো।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধংদেহী মনোভাব প্রদর্শনের অভিযোগ করে আসছে। অভিযানের পরপরই পুতিন তার পারমাণবিক বাহিনীকে উচ্চ সতর্কতায় রাখেন এবং গত বছর পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সীমা শিথিল করে একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেন।
এরই ধারাবাহিকতায়, পুতিন রবিবার ঘোষণা করেন যে রাশিয়া একটি নতুন পারমাণবিক শক্তিচালিত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল চূড়ান্ত পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে, যা বিশ্বজুড়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
মন্তব্য করুন