হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটির আমদানি-রফতানি কেন্দ্রিক কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ফলে দেশের সামগ্রিক বাণিজ্য কার্যক্রমে আঘাত এসেছে।
প্রতিদিন হাজার হাজার টন পণ্য এই জায়গা থেকে দেশে ও বিদেশে যায়। পোশাক, ইলেকট্রনিকস, ওষুধ, কৃষিপণ্য, ফুল ও প্রিমিয়াম কুরিয়ারসহ সব ধরনের পণ্য এখানে সাময়িকভাবে সংরক্ষণ হয়।
এই ভিলেজে আগুন লেগে বড় অংশ পুড়ে যাওয়ায় বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বহু ক্রেতা ও প্রতিষ্ঠান মুখ থমকে গেছে।
আগুন কেবল পণ্যের ক্ষতি নয়, পুরো সাপ্লাই চেইনকে অচল করার দিকে ঠেলে দেয়।
কার্গো হ্যান্ডলিং বন্ধ থাকলে দৈনিক কোটি-কোটি টাকার বাণিজ্য থেমে যেতে পারে। প্রাথমিক আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ কয়েকশো কোটি টাকা নয়, বরং আরও গভীর প্রভাব দেখা দিতে পারে—রফতানি আস্থা কমে যাওয়া ও লজিস্টিক সক্ষমতা খর্ব হওয়া।
টেক্সটাইল খাত অর্থনীতি-সম্ভাবনার মূল স্তম্ভ। তৈরি পোশাক সাধারণত অতি জরুরি অর্ডারের জন্য; সময়ই বড় ফ্যাক্টর।
একটি চালান ২৪ ঘণ্টা দেরিতে গেলে বহু সময় অর্ডার বাতিল হয়। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ–র নেতারা বলেন, এ ধরনের দুর্ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়; পোশাকপণ্য খোলা জায়গায় রাখা হয় এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতান্তই সীমমান।
আমদানিকারকরাও বড় আর্থিক ধাক্কা অনুভব করবেন—সামগ্রীতে ছিল ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল, যন্ত্রাংশ, মোবাইল ও ইলেকট্রনিক পণ্য, খাদ্য ও ফলমূল। এগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিমা দাবি ছাড়া বিকল্প পথ খুঁজে পাওয়া কঠিন হয় এবং নিষ্পত্তি সময়সাপেক্ষ হয়।
আন্তর্জাতিকভাবে বিমা ও বেজায়িত খরচ-প্রিমিয়াম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি নিরাপত্তা মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, তাহলে রেটিং কমে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে, ফলত কার্গো-হ্যান্ডলিং খরচ ও বিমা প্রিমিয়াম বৃদ্ধি পাবে—যা দীর্ঘমেয়াদে রফতানিকারকদের প্রতিযোগিতা ক্ষমতা কমাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবচেয়ে জরুরি হলো ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তালিকা তৈরি, বিকল্প কার্গো হ্যান্ডলিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ও বিমা ক্লেম নিষ্পত্তি দ্রুত সম্পন্ন করা। পাশাপাশি আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, ডিজিটাল মনিটরিং ও নিরাপত্তা প্রোটোকল পুনর্বিন্যাস দরকার।বিএসআইডিএস ও বিশ্লেষকদের মতে এখনই ধারাবাহিকতা ঠিক না থাকলে উৎপাদন, রফতানি ও বিনিয়োগে ধাক্কা লেগে যাবে।