বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গত কয়েক দিন ধরে ধারাবাহিকভাবে শক্তিশালী ও মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে শুরু করে এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলসহ বহু দেশে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে ভূকম্পন রেকর্ড হয়েছে। সাম্প্রতিক ভূমিকম্পগুলোর ঘনঘন উপস্থিতি সাধারণ মানুষের মধ্যে একদিকে যেমন উদ্বেগ তৈরি করেছে, তেমনি অনেকে এই প্রাকৃতিক ঘটনার সঙ্গে হাদিসে উল্লেখিত কিয়ামতের আলামতের মিল খুঁজছেন।
ইসলামিক সূত্র মতে, রাসুলুল্লাহ (সা.) সহিহ বুখারির একটি বর্ণনায় বলেছেন, "কিয়ামত আসার আগে ভূমিকম্প প্রচুর পরিমাণে ঘটবে।" হাদিসবিদদের মতে, শেষ যুগে বিশ্বব্যাপী ধারাবাহিক ভূকম্পন কিয়ামতের ছোট আলামতগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত। সুনান তিরমিজিতেও এসেছে, অশান্তি, ফিতনা ও বিপর্যয়ের সঙ্গে সঙ্গে ভূমিকম্পের মাত্রা ও সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্পের সাম্প্রতিক রিপোর্ট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গত কয়েক দিনে একাধিক মহাদেশে কম্পন ছড়িয়ে পড়ে। দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েক দশক ধরে এত অল্প সময়ের ব্যবধানে এতগুলো কম্পনের নজির খুব কমই দেখা গেছে। বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলেও দুই দফা কম্পন অনুভূত হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
ধর্মীয় আলোচকদের মতে, ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক ঘটনা হলেও এগুলো মানুষের জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে বিবেচিত। মানুষকে তওবা, ইস্তিগফার, সৎকর্ম এবং আল্লাহর দিকে ফিরে আসার সুযোগ স্মরণ করিয়ে দেয় এসব মহাজাগতিক ঘটনা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূ-তাত্ত্বিক প্লেটের নড়াচড়ার ফলেই পৃথিবীতে প্রতিদিন ছোট-বড় অনেক কম্পন ঘটে। তবে একাধিক অঞ্চলে স্বল্প ব্যবধানে শক্তিশালী ভূমিকম্প হওয়াকে তাঁরা ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি হিসেবে দেখছেন। এতে ভবিষ্যতে আরও বড় ধাক্কার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা।
সাম্প্রতিক এসব ঘটনা প্রাকৃতিক নাকি কিয়ামতের আলামতের সঙ্গে সম্পর্কিত—এ বিষয়ে ভিন্নমত থাকলেও বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষ এখন নৈতিক মূল্যবোধ, সতর্কতা ও আত্মসমালোচনায় ফিরে আসার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন।
মারুফ/সকালবেলা
মন্তব্য করুন