Deleted
প্রকাশ : শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:২৭ অপরাহ্ণ
অনলাইন সংস্করণ

পদ্মার চরজুড়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ‘কাঁকন বাহিনী’

পদ্মার চরজুড়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ‘কাঁকন বাহিনী’

রাজশাহী, নাটোর, পাবনা ও কুষ্টিয়ার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে প্রায় এক দশক ধরে আধিপত্য বিস্তার করে আসছে ‘কাঁকন বাহিনী’। দখল, চাঁদাবাজি, বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ ও সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে অন্তত চার জেলার পাঁচ উপজেলার মানুষ।

গত সোমবার রাজশাহীর বাঘা এবং নাটোরের লালপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী চরাঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কাঁকন বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে দুই ব্যক্তি নিহত ও কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। পরদিন পদ্মা নদীতে ভাসমান অবস্থায় আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, নিহত ব্যক্তি কাঁকন বাহিনীর সদস্য ছিলেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বাহিনীর প্রধান মো. রোকনুজ্জামান কাঁকন (বয়স আনুমানিক ৫০–৫৫) কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার রায়চা গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি প্রকৌশলী হলেও ২০০৭ সালে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে স্থানীয় রাজনীতির আশ্রয়ে বালুমহাল ব্যবসায় যুক্ত হন। ধীরে ধীরে বালুমহাল নিয়ন্ত্রণের লড়াই থেকে গড়ে তোলেন নিজের সশস্ত্র বাহিনী। বর্তমানে তাঁর দলে শতাধিক সদস্য রয়েছে, যাদের মধ্যে প্রায় ১০ জন সর্বক্ষণ সশস্ত্র অবস্থায় তাঁর পাহারায় থাকে।

কাঁকন বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে পদ্মার দুর্গম চরের একাধিক বালুমহাল। বালু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায়, নদীপথে নৌযান আটকে রাখা এবং মাঝপদ্মায় বালু উত্তোলনে বাধা দেওয়া তাঁদের দৈনন্দিন কাজ। স্থানীয় বালু ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘চাঁদা না দিলে কাজ বন্ধ করে দেয়, মাঝনদীতে নৌকা আটকে রাখে।’

চরাঞ্চলের সাধারণ মানুষ জানায়, বছরের পর বছর তারা ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন। কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পান না। পদ্মার চরের কৃষক, জেলে ও বালু শ্রমিকদের মুখে একটাই কথা— ‘কাঁকন বাহিনী মানেই ভয়।’

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে র‌্যাব, সেনাবাহিনী ও পুলিশ একাধিক অভিযান চালিয়ে কাঁকন বাহিনীর কয়েকজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। গত জুলাইয়ে সেনাবাহিনীর অভিযানে তিনটি বিদেশি অস্ত্র, গুলি, নগদ টাকা ও চাঁদার তালিকা উদ্ধার হয়। তবে কাঁকন নিজে এখনও অধরা।

রাজশাহীর বাঘা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুপ্রভাত মণ্ডল বলেন, ‘পদ্মার চরে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়েছে। সাম্প্রতিক সংঘর্ষেও তদন্ত চলছে।’

কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, কাঁকনের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। তবে অভিযোগকারীরা ভয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চান না। রাজশাহী ও খুলনা রেঞ্জ পুলিশের যৌথ সভায় সম্প্রতি এই বাহিনীর কার্যক্রম রোধে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

নাটোরের এসপি মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) খন্দকার মো. শামীম হোসেন বলেন, সংশ্লিষ্ট জেলার এসপিরা এ বিষয়ে কাজ করছেন।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অভ‍্যন্তরীণ ইস্যুতে কোনো দেশের হস্তক্ষেপ চায় না বাংলাদেশ: খ

1

মিললো সুদানে ইউএন ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলায় শহীদ ৬ বাংলাদেশি

2

মেসিকে জার্সি উপহার দিলেন টেন্ডুলকার

3

মিরপুরে ডিএনসিসি’র উচ্ছেদ অভিযানে বাধা ও ভাঙচুর, ম্যাজিস্ট্র

4

আইপিএলে সর্বোচ্চ ভিত্তিমূল্যে মোস্তাফিজ, সাকিব ১ কোটিতে

5

সালমান শাহ হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে মা

6

শিকলবন্দী শান্তর চিকিৎসায় এগিয়ে এলেন ইউএনও, তুলে দিলেন ১৫

7

বরিশালে বিএনপি নেতার নেতৃত্বে জামায়াত নেতাকে পিটিয়ে জখম, হাস

8

ভর্তুকি দিয়ে শিল্প চালানো সম্ভব নয় : শিল্প উপদেষ্টা

9

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ, গড় পাসের হার ৫৮ দশমিক

10

ভূমিকম্পে যে নির্দেশনা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

11

সিরিয়ায় অতর্কিত হামলা, ২ মার্কিন সেনা নিহত

12

জনগণকে বোকা বানাবেন না: মির্জা ফখরুল

13

মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার মামলার রায় ১৭ নভেম্বর

14

হাদিকে গুলির ঘটনায় নির্বাচনে প্রভাব পড়বে না : সিইসি

15

জাতীয় নির্বাচনে ভোটের সময় এক ঘণ্টা বাড়াল ইসি

16

আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামল, লুটপাটের মাশুল গুনছে ব্যাংক খ

17

ভূমিকম্পের সময় যে দোয়া পড়তে বলেছেন নবীজি

18

বেগম জিয়ার জন্য জার্মানি থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাচ্ছে কা

19

অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ ও গঠন প্রক্রিয়া বৈধ: আপিল বিভাগ

20
সর্বশেষ সব খবর