অজানা এক কঠিন রোগে আক্রান্ত আট বছরের শিশু আবু তাছিনকে বাঁচিয়ে রাখতে তার হাত-পা বেঁধে রাখতে বাধ্য হয়েছেন অসহায় বাবা-মা। মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে শিশুটি প্রায়ই নিজের শরীর নিজে কামড়ে ও আঘাত করে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলে। সন্তানের এই কষ্ট সহ্য করতে না পেরে এবং তাকে সুরক্ষিত রাখতে বাবা-মা বাধ্য হয়েই এই বেদনাদায়ক পথ বেছে নিয়েছেন।
নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরশহরের দশাল এলাকার রিকশাচালক সুজন মিয়া ও গার্মেন্টস কর্মী তাসলিমা বেগমের একমাত্র সন্তান তাছিন। মাত্র দুই বছর বয়স থেকেই তার মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ দেখা দিতে শুরু করে এবং বয়স বাড়ার সাথে সাথে তা আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। দরিদ্র পরিবারটি সহায়-সম্বল হারিয়ে এখন আর সন্তানের চিকিৎসা চালাতে পারছে না। ফলে দিনরাত তাকে বেঁধেই রাখা হয়।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, উন্নত ও নিয়মিত চিকিৎসার মাধ্যমে তাছিনকে সারিয়ে তোলা সম্ভব।
সম্প্রতি, শিশু তাছিনকে বেঁধে রাখার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা কেন্দ্রীয় বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামালের নজরে আসে। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে দলীয় নেতাকর্মীদের মাধ্যমে শিশুটির পরিবারের খোঁজখবর নেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে শিশু তাছিনের সম্পূর্ণ চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দেন এবং তার দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেন।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, "একটি শিশু কখনোই শৃঙ্খলিত জীবনে বেঁচে থাকতে পারে না। তাছিন যেন একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন ফিরে পায়, সেজন্য তার সব চিকিৎসার দায়িত্ব আমি নিলাম।"
বিএনপি নেতার এই মানবিক উদ্যোগে স্থানীয় জনগণ ও সামাজিক সংগঠনগুলো তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। সবাই আশা করছেন, এই সহায়তার মাধ্যমে তাছিনের জীবনে নতুন আলো ফিরবে এবং সে অন্য শিশুদের মতো স্বাভাবিক জীবনে মায়ের কোলে ফিরে আসবে।
এম.এম/সকালবেলা
মন্তব্য করুন