
মহান মুক্তিযুদ্ধের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রথম প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকার, বীর উত্তম ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে বার্ধক্যজনিত কারণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এ কে খন্দকার ছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি ডেপুটি চিফ অব স্টাফ হিসেবে ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৬ ডিসেম্বর রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তিনি অন্যতম প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি নবগঠিত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে পুনর্গঠিত করেন এবং বাহিনীর প্রথম প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
কিলো ফ্লাইট প্রতিষ্ঠা: ১৯৭১ সালে তিনি পাকিস্তান বিমান বাহিনী ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ভারতের নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে তিনি প্রথম বাংলাদেশ বিমান বাহিনী (কিলো ফ্লাইট) প্রতিষ্ঠা করেন, যা সীমিত সম্পদ নিয়েও আকাশপথে গুরুত্বপূর্ণ অভিযান পরিচালনা করেছিল।
মুজিবনগর সরকার: তিনি মুজিবনগর সরকারের অধীনে প্রশিক্ষণ ও অপারেশনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন।
বীর উত্তম খেতাব: মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য সাহসিকতা ও অবদানের জন্য তাকে ‘বীর উত্তম’ খেতাবে ভূষিত করা হয়।
বিমান বাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব শেষে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পাবনা-২ (বেড়া-সুজানগর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১১ সালে তিনি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মান ‘স্বাধীনতা পদক’ লাভ করেন।
তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ঢাকার কুর্মিটোলা বিমান ঘাঁটির নামকরণ করা হয়েছে ‘বিএএফ ঘাঁটি এ কে খন্দকার’। তার প্রয়াণে দেশের সামরিক ও বেসামরিক মহলে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মারুফ/সকালবেলা