প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাসের ব্যাপক বিস্তার ঠেকাতে জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, এবার স্বাধীনতা দিবসের প্রায় সব অনুষ্ঠানই বাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ভাইরাসটি মোকাবিলায় আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন সরকারপ্রধান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অযৌক্তিকভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি করবেন না। জনগণের দুর্ভোগ বাড়াবেন না। সর্বত্র বাজার মনিটরিং-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ গুজব ছড়াবেন না। গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় ৫০০ জন চিকিৎসক প্রস্তুত থাকবেন। ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় দেশের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ২৯ তারিখ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, নিম্নআয়ের ব্যক্তিদের ‘ঘরে-ফেরা’ কর্মসূচির আওতায় নিজ নিজ গ্রামে সহায়তা প্রদান করা হবে। গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য বিনামূল্যে ঘর, ৬ মাসের খাদ্য এবং নগদ অর্থ প্রদান করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ভাষানচরে ১ লাখ মানুষের থাকার ও কর্মসংস্থান উপযোগী আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে কেউ যেতে চাইলে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিনামূল্যে ভিজিডি, ভিজিএফ এবং ১০ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। একইভাবে বিনামূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসা সেবা ও দেওয়া হচ্ছে। এ সময় নিম্নআয়ের মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ভাষণে মোবাইলে ব্যাংকিংয়ে আর্থিক লেনদেনের সীমা বাড়ানো হয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎ, পানি এবং গ্যাস বিল পরিশোধের সময়সীমা সারচার্জ বা জরিমানা ছাড়া জুন মাস পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এনজিওগুলোর ঋণের কিস্তি পরিশোধ সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে।
নিজের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী দেশের নাগরিকদের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের উপদেশ মেনে চলার আহ্বান জানান। প্রবাসীদের ১৪ দিনের জন্য হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতেও অনুরোধ করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে যে কোনো কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সরকার প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে সংকট মোকাবিলায় তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। পাশাপাশি এই সংকটময় সময়ে সবাইকে ধৈর্য্য ধরে সাহসিকতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার আহ্বান জানান।
বিশ্বের ১৯৪টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। এ ভাইরাস সংক্রমণে বিশ্বে এ পর্যন্ত মারা গেছেন অন্তত ১৮ হাজার ৮৯২ জন এবং আক্রান্ত হয়েছে কমপক্ষে ৪ লাখ ২৪ হাজার ৮৬৩ মানুষ। দেশে আক্রান্ত হয়েছে ৩৯ জন। মারা গেছেন ৫ জন। সুস্থ হয়েছেন ৭ জন।